সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজটি সরকারি এম এম আলী কলেজ নামেও পরিচিত। কলেজ টি টাংগাইল জেলার টাংগাইল সদর উপজেলার অন্তর্গত, কাগমারী নামক স্থানে টাংগাইল-নাগরপুর রোডের পাশে অবিস্থত। এটা প্রতিষ্ঠা করেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খাঁন ভাসানী তাঁর রাজনৈতিক গুরু, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ব্যাক্তিত্ব ও খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মাওলানা মোহাম্মদ আলীর নামে ১৯৫৭ সালের ১লা জুলাই কাগমারীতে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কলেজ টি ২০৭০ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
মজলুম জননেতা তাঁর রাজনৈতিক গুরু, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ব্যাক্তিত্ব ও খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মাওলানা মোহাম্মদ আলীর নামে ১৯৫৭ সালের ১লা জুলাই কাগমারীতে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন; জন্ম সিরাজগঞ্জে। প্রথম জীবনের রাজনৈতিক কর্মস্থল আসাম। দেশ বিভাগের পর স্থায়ীভাবে সন্তোষে বসবাস করেন। চির বিদ্রোহী এই মহান নেতার সারা জীবনের আরাধ্য ছিল সকল প্রকার শোষণ, শাসন ও বন্ধন থেকে গণ মানুষের মুক্তি। এই উদ্দেশ্য সাধনে তিনি এক জায়গায় আবদ্ধ থাকেননি কোনদিন। মুসলিম লীগে নেতৃত্ব দিয়ে ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন পাকিস্থান। কিন্তু সেই ৪৭ই বুঝতে পেরেছিলেন যে পাকিস্থান বাঙ্গালির জন্য আর একটি গোলামীর জিঞ্জির।ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৯ এ প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৬ সালে কাগমারীতে আয়োজন করেন ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের। এখান থেকেই তিনি পাকিস্থানকে জনান “আসসালামু আলাইকুম”। এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা ও গণমানুষের মুক্তি। সম্মেলনের চেতনাকে ধারণ করেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আজকের এই মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ (কাগমারী কলেজ নামে অধিক পরিচিত)। অনেকেরই দাবী ছিল কলেজটি টাঙ্গাইল শহরে স্থাপনের। কিন্তু এ দাবী না মেনে শহরের প্রান্ত সীমায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা করে এ অঞ্চলের সাধারন মানুষ, বিশেষ করে গ্রাম ও চর অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের সন্তানদের জন্য উচ্চ শিক্ষার দ্বার খুলে দেন। আজ তাঁর পুণ্য স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জনানাই।
১৯৫৭ সালের ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের অল্প কিছুদিন পরেই মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী নতুন করে অনুভব করলেন যে, এদশের মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য একান্ত প্রয়োজন শিক্ষার। তাই পল্লীর হত দরিদ্র মানুষের সন্তানদের শিক্ষিত করার লক্ষ্যে উপমহাদেশের খিলাফত আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ ও তাঁর রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু মাওলানা মোহাম্মদ আলীর নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ১৯৫৭ সালের ১লা জুলাই কলেজটি স্থাপন করলেন। টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩ কি.মি.দক্ষিণে ঐতিহাসিক কাগমারী পরগণায় যেখানে শায়িত আছেন মহান আধ্যাত্মিক পুরুষ হযরত পীর শাহ জামান (রঃ) তাঁর পুণ্য স্মৃতিকে ঘিরে এই কলেজটি মাওলানা ভাসানী সাহেব গড়ে তুলেন। তারপর থেকেই এই কলেজের সুনাম সারা দেশে ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী তারিখে কলেজটি শিক্ষানুরাগী মজলুম জননেতার বিশেষ অনুরোধে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান জাতীয়করণ করেন। এরপর থেকেই কলেজটি একাধিকবার জেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এই কলেজের একজন অধ্যক্ষ জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের সম্মানে ভুষিত হয়েছেন। এছাড়া শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করেছেন। কলেজটিতে উন্নতির ধারা অব্যাহত আছে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ১৫টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এই কলেজের ফলাফল বরাবরই সন্তোষজনক। এই কলেজে পর্যাপ্ত ক্লাশ রুম, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও দক্ষ শিক্ষক মন্ডলী রয়েছে। ফলে এখানে সারা বছর কোন না কোন পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার পাশাপাশি সাধারণ ক্লাশ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস